দীঘিনালায় পাহাড়িদের ওপর হামলা, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে ৭২ ঘণ্টার ‘সিএইচটি ব্লকেড’ নামে সড়ক অবরোধ চলছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ চলবে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে।
অপরদিকে সংঘর্ষের সময় বাস, ট্রাক ও অটোরিকশা ভাঙচুর এবং শ্রমিক আহত হওয়ার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট পালন করছেন যৌথ মালিক শ্রমিক নেতারা।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে শহরের একমাত্র পরিবহন অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে দূর পাল্লার যানবাহনও। নৌযান চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
বুধবার খাগড়াছড়ি সদরে মোটরসাইকেল চুরিকে কেন্দ্রে করে গণপিটুনিতে মো. মামুন (৩০) নামের এক বাঙালি যুবককে হত্যা করার জেরে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই দিন সেখানকার পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে হত্যার প্রতিবাদে দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বাঙালিদের অভিযোগ, মিছিলটি বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় পাহাড়িরা বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে বিভিন্ন দোকান ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।
দীঘিনালা উপজেলায় সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, পানছড়ি ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় তিনজন নিহত হন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)।
আগের দিনের ঘটনার জেরে গতকাল খাগড়াছড়ির পাশাপাশি রাঙামাটিতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খাগড়াছড়িতে তিন পাহাড়ির মৃত্যু ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সকালে রাঙামাটি জেলা সদরে ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন পাহাড়িরা। মিছিলে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।