সম্প্রতি নিউইয়র্কে একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, কারাগারের কর্মকর্তারা একজন বন্দিকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্কের গভর্নর কাথি হোকুল ১৩ জন কর্মকর্তা ও এক নার্সকে বরখাস্ত করেছেন। এটি একটি উদ্বেগজনক এবং বেদনাদায়ক ঘটনা, যা একদিকে কারাগারের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশ্ন তুলেছে।
ঘটনাটি গত ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে, মার্সি কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে(সংশোধনাগার) ৪৩ বছর বয়সী রবার্ট ব্রুকস নামের বন্দিকে হাতকড়া পরা অবস্থায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের মতো স্থানে নেয়া হয়েছিল।কিন্ত পরের দিন ১০ ডিসেম্বর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তারা রবার্ট ব্রুকসকে একাধিকবার মারধর করেছেন, যার ফলে তার মৃত্যু ঘটে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কর্মকর্তারা ব্রুকসকে বারবার মুখে এবং নিম্নাংশ (Groin)-এ আঘাত করছেন।এছাড়াও একজন কর্মকর্তা তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে সোজা করে তুলে পরীক্ষার টেবিলের উপর ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে একটি কর্মকর্তা তার মুখে কিছু রাখেন এবং তারপর তাকে আঘাত করেন। অন্যান্য কর্মকর্তারাও তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তার মৃত্যুর কারণ ছিল “গলার উপর চেপে ধরা”।
ভিডিও প্রকাশের পর নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস বলেন, তিনি এই ভিডিওটি ছাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন কারণ তিনি ব্রুকসের পরিবার এবং নিউইয়র্কের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ অনুভব করেছেন। গভর্নর কাথি হোকুলও ঘটনাটি শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, তিনি এই বিষয়টির পূর্ণ দায়িত্ব নিতে চান এবং অভিযুক্তদের শাস্তি দেবেন।
ব্রুকস ১২ বছরের সাজা ভোগ করছিলেন এবং তাকে মোগোক কারেকশনাল ফ্যাসিলিটি থেকে মার্সি কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তার পরিবার ভিডিওটি দেখে দুঃখ প্রকাশ করে এবং বলেন যে, এটি “ভয়ঙ্কর এবং চরম আক্রমণ”। নিউইয়র্কের আমেরিকান সিভিল লিবারটিস ইউনিয়ন (এসিলু) অভিযোগ করেছে যে, এটি একমাত্র ঘটনা নয়, বরং একটি সহিংসতা সংস্কৃতির প্রকাশ এবং সংশোধন কর্মকর্তাদের শাস্তির অভাব।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, মানবাধিকার সংস্থাগুলি এবং রাজনৈতিক নেতারা সহিংসতা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।
তথ্যসূত্র : বিবিসি