হকার শাহজাহান হত্যার ঘটনায় রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় করা মামলায় আলোচিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক খুদে বার্তায় বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা হতে জিয়াউল আহসানকে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাতে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, জিয়াউল আহসান বিভীষিকাময় ‘আয়নাঘরের কারিগর’।
শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর গত ৬ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে জানিয়েছিল।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের বিরোধী শিবির ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে ফোনে আড়িপাতা এবং গুপ্তহত্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতিকে সহযোগিতা করার অভিযোগ তুলেছিলেন।
শেখ হাসিনার আমলে বিরোধীদলের বহু নেতাকর্মী নিখোঁজ হয়েছেন। তারা কোথায় তাদের কোনো খোঁজ নেই। এমনকি সেনাবাহিনীর লোকজন রয়েছেন ওই তালিকায়। আয়নাঘর আসলে গোয়েন্দাদের একটি গোপন বন্দিশালা বা ডিটেনশন ক্যাম্প।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আয়নাঘর’ হচ্ছে ‘গুমখানা’। হাসিনার শাসনকালে ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে মোট ৬০৫ জনকে গোপনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল।
ভুক্তভোগীরা জানান, শেখ হাসিনা বিরুদ্ধ মত সহ্য করতে পারছিলেন না। আর সেই কারণে রাজনৈতিক বন্দিদের জন্য তৈরি করেছিলেন আয়না ঘর। যা ছিল রাজনৈতিক বন্দিদের কাছে ত্রাস বা বিভীষিকাময়। সারাদেশে ডিজিএফআই’র ২৩টি গোপন আটক কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটি রয়েছে ঢাকায়।
২০২৪ সালের হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার বছর, ২০০৯ সাল থেকে তার পতন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৬০০টিরও বেশি গুম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ধারণা করা হয়, আয়নাঘরে কমপক্ষে ১৬টি কক্ষ রয়েছে, যেখানে একসঙ্গে ৩০ বন্দি রাখার সক্ষমতা রয়েছে। আয়নাঘরটি বাংলাদেশের ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত বলে ধারণা করা হয়। আর এই আয়নাঘরের কারিগর অব্যাহতি পাওয়া মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান বলে জানান অনেকে।