দেশের সিস্টেমগুলোতে ক্যানসার ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারজিস আলম বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ক্যান্সার নির্মূল করে জনগণের ভোটের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার আনতে হবে। এর জন্য দুটি কাজ আমাদের করতেই হবে। এক, আমাদের ধৈর্য হবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করা। দুই, আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ, দলাদলি ও মুখোমুখি হওয়ার যে ট্র্যাডিশন, সেটি থেকে কিছু সময়ের জন্য বিরত হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থ, মান-অভিমানগুলোকে একপাশে রেখে বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে হবে।
বৈষম্য দূর করতে হলে রংপুর বিভাগকে এগিয়ে নিতে হবে জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, যারাই দেশের নেতৃত্বে আসবে তাদের বলতে চাই আগামীতে দেশসেরা একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর বিভাগে লাগবে। দেশের সেরা কয়েকটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় লাগবে। বছরের পর বছর ধরে আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা শুনেছি, কিন্তু বিগত সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি। ফ্যাসিস্ট সরকার পদ্মা সেতু এবং পদ্মা রেল সেতু করতে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। অথচ রংপুরের তিস্তাপাড়ের কোটি মানুষ প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এক হাজার কোটি টাকা দরকার ছিল, সেটি ওই ফ্যাসিস্ট সরকার করতে পারেনি।
সাংবাদিকদের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা বিগত ১৬ বছরে যা বলা উচিত ছিল, যা বলতে চেয়েছিল তা কিন্তু বলতে পারে নাই। কিন্তু আজকে এত বড় একটি মঞ্চে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার সামনে তাদের যে জিনিসটি মনোভূত হয়নি তারা প্রতিবাদ জানাতে পেরেছেন। এটিই হচ্ছে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অর্জনে স্বাধীনভাবে কথা বলা ও প্রতিবাদ জানানোর প্রমাণ।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন ডিজিএফআইয়ের ও ডিবির হারুনের হেফাজতে ছিলাম, তখন আমাদের অনেক সাংবাদিক ভাই নিউজ প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের চাপ দিয়ে নিউজ প্রকাশ করতে দেওয়া হয় নাই। আবার অনেকে আমাদের বিষয়টিকে ছোট করে কিংবা একপাশে রেখে আসল সংবাদগুলো আড়াল করেছিলেন।
সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আপস না করার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় এই সমন্বয়ক বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইদের ওপর বিশাল দায়িত্ব। এই রংপুরে একজন ব্যক্তি এককভাবে যে জিনিস এক হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে সেটা আপনারা পুরো বাংলাদেশের সামনে নিতে পারবেন। যেখানে চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট, ঘুস, নিয়োগ বাণিজ্য, হাজার হাজার টাকার অবৈধ লেনদেন দেখেন সেগুলো আপনাদের (সাংবাদিকদের) তুলে ধরতে হবে। এগুলো সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতা।