চাকরির বাকি আর মাত্র দু’বছর দশ মাস। এরইমধ্যে পুলিশের পোশাকে কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের ৩৭টি বসন্ত। তবে পালক ঝরে পড়ার আগে ফিনিক্স পাখির মতো জ্বলে উঠেছেন বগুড়ার ট্রাফিক বিভাগের কনস্টেবল আব্দুস সামাদ। ৫৭ বছর বয়সে তিনি কারিগরি শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন৷
রোববার (১২ মে) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে পুলিশ সদস্য আব্দুস সামাদের এ সাফল্যের খবর জানা যায়। চাকরি শেষে হোমিও চিকিৎসায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখেন সামাদ। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আব্দুস সামাদ ১৯৬৮ সালে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে ১৯৮৭ সালে অষ্টম শ্রেণি পাসে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগদান করেন।
তিনি বগুড়ার শেরপুর, সদর ও নন্দীগ্রাম ডিএসবি, সদর কোর্ট এবং সর্বশেষ বগুড়া ট্রাফিক পুলিশের সদস্য হিসেবে কর্মরত আছেন। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে অষ্টম শ্রেণি পাস করেই পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন তিনি।
আব্দুস সামাদ জানান, তার চাকরির বয়স আর মাত্র ২ বছর ১০ মাস আছে। চাকরি শেষে হোমিও চিকিৎসায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখেন সামাদ। কিন্তু সেই কোর্সে ভর্তি হতে তার এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট প্রয়োজন৷ ফলে সিদ্ধান্ত নেন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২২ সালে তিনি নাটোর মহর কয়া নতুনপাড়া কারিগরি ইনস্টিটিউটটে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখান থেকেই এ বছর তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
আব্দুস সামাদের এসএসসি পাসের খবর জানার পর তার কর্মস্থল ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ডিপার্টমেন্ট থেকে সদস্যদের মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবসময় ইতিবাচক সহযোগিতা করা হয়। দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সামাদের ৫৭ বছর বয়সে এসে এসএসসি পাস সমাজের সবশ্রেণি পেশার মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা। মানুষ চাইলে সব সাধন করতে পারেন, সামাদ তারই প্রতিফলন দেখিয়েছেন।