আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশের প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ব্যাংক খাতসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক রদবদল দেখা গেছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবি উঠেছে। এদিকে আইনজীবীরা রাষ্ট্রপতির অপসারণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন।
রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবি কেন?
মূলত, বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্টে সর্বপ্রথম এ দাবির কথা জানান। তার কয়েক ঘণ্টা পর সমন্বয়ক সারজিস আলমও তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একই কথা লিখে পোস্ট করেন।
এরপর-ই এই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাদের দু’জনের পোস্টেই মোট পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের বাইরে বাকি চারটি দাবি হল– ‘আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতকরণ, নতুন সংবিধান গঠন, আওয়ামী দুর্নীতিবাজ আমলাদের পরিবর্তন ও হাসিনার আমলে করা সব অবৈধ চুক্তি বাতিল।’
ঠিক কী কী কারণে তারা হঠাৎ করে এসব দাবি, বিশেষ করে রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবি তুলেছেন, এ বিষয়ে জানতে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দিনভর উভয়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কেউই কোনো সাড়া দেননি।
পরবর্তীতে একপর্যায়ে কথা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদের সঙ্গে। তিনি জানান, তারা সবাই ওই দাবির সঙ্গে একমত।
সেক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আসলে ঠিক কী কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ চাচ্ছেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘একটি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হইছে। তাই, ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্ধারিত রাষ্ট্রপতি থাকলে তা যেকোনো সময় রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠতে পারে।’
‘এই কারণে আমরা মনে করি, ওনাকে সহজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সসম্মানে কিভাবে বিদায় দেওয়া যায়, সেদিকটা নিয়ে ভাবা উচিত। উনি ফ্যাসিজমের একটি সিম্বল। সেই সিম্বলটা থাকা উচিত না।’
বর্তমান রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে সবার কাছে ‘গ্রহণযোগ্য’ ও ‘দেশপ্রেমিক’ রাষ্ট্রপতি চান তারা।
হাসিনা সরকার পতনের প্রায় দুই মাস পর কেন এখন এই দাবি তুলছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর আগেও তারা বলেছিলেন। তবে এখন তারা জোরালোভাবে বলছেন।
সুত্র: বিবিসি বাংলা