জলি আহমেদ….
যুক্তরাষ্ট্রে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা নিন্ম আয়ের। ফলে এই মানুষগুলো চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার পান না। এমন অনেকে আছেন যাদের আয়-ব্যয়ের হিসাবেই আটকে থাকে জীবন। বাসাভাড়া দিয়ে আয় এবং ব্যয়ের সামঞ্জোস করা কঠিন হয়ে পরে।
কমিউনিটির এসব নিন্ম আয়ের পিছয়ে পরা মানুষের ও নতুন যারা আমেরিকায় আসেন, প্রবাসী বাঙালি সবার কথা চিন্তা করেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সেইভ দ্য পিপল ও মুনা সোশ্যাল সার্ভিসেস। আর তাদের এই উদ্যোগের পাশে থেকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি ফাউন্ডেশন। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এগিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের এই সহায়তার কারণে অনেক পরিবারের মুখে ফুটেছে হাসি। জীবন হয়েছে সহজ।
বরাবরের মতো এবারও ৭ এপ্রিল নিউইয়র্কের জ্যামাইকাতে পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে খাবার এবং বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ ২০টির মতো সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এই কর্মসূচি আয়োজন করেছেন বাংলাদেশি মাওলানা শহীদ উল্লাহ। পবিত্র রমজানে প্রতি সপ্তাহে তারা খাবার বিতরণ করেছেন। রমজানের পর প্রতি মাসে এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান শহীদ উল্লাহ। একই সঙ্গে সামাজিক এই মহৎ উদ্যোগে অবদান রাখায় ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (ডব্লিউইউএসটি) চ্যান্সেলর প্রকৌশলী আবুবকর হানিপসহ অন্যান্য দাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
“আবুবকর হানিপ উনাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি সব সময় এমন মহৎ উদ্যোগের সঙ্গে থাকেন। আমাদের সহযোগিতা করেন। অন্যান্য যারা রয়েছেন তারাও আমাদের সহযোগিতা করে চলেছেন।”
তিনি বলেন, নিউইয়র্কের যারা নিম্ন আয়ের মানুষ। অথবা নতুন অধিবাসী যারা, তাদের মাঝে আমরা খাবার ও ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন গ্রোসারি আইটেম বিতরণ করছি। এখানে ২০টির মতো আইটেম বিতরণ করছি। যারা এসব পণ্য পাওয়ার যোগ্য সেই অসহায় মানুষগুলো আমাদের কাছে ছুটে আসছেন। তাদের সহযোগিতার জন্য শুধু কুইন্স নয়, ব্রুকলিন, ম্যানহাটনসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন আমাদের ভলান্টিয়াররা। প্রায় সাড়ে ১০০০ এর মতো পরিবার এখানে খাবার নিতে এসেছেন। আমরা সবার হাতে সুন্দর ও সম্মানজনকভাবে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছি।
এসময় এর উদ্যোক্তা মাওলানা শহীদ উল্লাহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আবুবকর হানিপ উনাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি সব সময় এমন মহৎ উদ্যোগের সঙ্গে থাকেন। আমাদের সহযোগিতা করেন। অন্যান্য যারা রয়েছেন তারাও আমাদের সহযোগিতা করে চলেছেন।
তিনি আরও বলেন, এবার আমাদের পণ্যে দুধ, তেল, আলু-পেঁয়াজসহ অন্যান্য গ্রোসারি আইটেম রেখেছি। এখানের স্থানীয় লোকজনের মধ্যে এই সহযোগিতা খুব প্রয়োজন। ভবিষ্যতে আমার এর পরিসর আরও বাড়াবো।
এদিকে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে খাবার নিতে আসা প্রবাসী বাঙালিরা জানান, এমন সাহায্য পেয়ে তারা খুবই আনন্দিত। তারা চান এর পরিসর যেন আরও বাড়ানো হয়।
খাবার ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে আসা এক নারীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, অনেক ভালো লাগছে। এখানে খুব ভালো ভালো জিনিস রয়েছে। যে পরিমাণ খাবার দিয়েছে তা ছোট পরিবারের প্রায় ১০-১৫ দিন চলে যাবে। দোয়া করি এর আয়োজকরা দীর্ঘজীবী হোন। তাদের জন্য অনেক শুভ কামনা। তারা আরও যেন এ ধরনের সহযোগিতা করতে পারেন সেই দোয়া করি।
আরেকজন বলেন, এখানে যে খাবার দেওয়া হয় এগুলো সবার জন্য ভালো। বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক সবার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রে হালাল ফুড সব জায়গায় পাওয়া যায় না। কিন্তু এখানে মুসলিম কমিউনিটি হিসেবে তারা হালাল খাবার দিচ্ছে। এটা অনেক ভালো।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা বাংলাদেশি অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এই কর্মসূচিতে অবদান রাখছেন। এভাবেই তারা বিভিন্ন অসহায় মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।