যুক্তরাষ্ট্রে আবারো পুলিশের গুলিতে এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন। তার নাম হোসেন আল রাজি (১৮)। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে মিশিগানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হোসেন আল রাজি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোহাম্মদ আতিক হোসেনের বড় ছেলে। দেশের বাড়ি সিলেটের বিয়ানিবাজার পৌরসভার সুপাতলায়। প্রায় ১৬ বছর আগে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে যান।
নিহতের বাবা মোহাম্মদ আতিক হোসেন বলেন, আমার দুই ছেলে ও আমি সকালে একসঙ্গে ফজরের নামাজ পড়ি। তারপর সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। দুপুরের দিকে ওর মা ও আমার মেজো ছেলে আমাকে বলছে হোসেন আল রাজি অসংলগ্ন আচরণ করছে। আমিও দেখি ও ভিন্ন আচরণ করছে। আমার মেজো ছেলেকে দিয়ে ৯১১ এ কল দেই। অ্যাম্বুলেন্সের সহযোগিতায় আমার ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়া যায় কি না। কিছুক্ষণের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশ এলে আমরা নিরাপদ স্থানে আছি কি না জানতে চাওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা গ্যারেজের গাড়ির ভেতর আছি বলার কিছু সময়ের মধ্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পাই। কিছুক্ষণ পরই পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের ডেকে সবাইকে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে নিয়ে সবার জবানবন্দি নেন। আমরা সবাই বাসায় ফিরে এলে বিকেল ৪টার দিকে খবর আসে আমার ছেলে মারা গেছে। আমি অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্য চাইলাম ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আর পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেললো। কি এমন অপরাধ করলো আমার ছেলে, যে কারণে ওকে গুলি করে মারতে হলো।
তিনি মিশিগানে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকান সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।
এদিকে ওয়ারেন সিটি পুলিশের এক কর্মকর্তা স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, মধ্য দুপুরে ৯১১ এ পরিবারের পক্ষ থেকে একটা ফোন আসে। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে যান।
এসময় পুলিশ কর্মকর্তারা ওই যুবকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখতে পান এবং অস্ত্র ফেলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই যুবক তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকে অস্ত্র নিয়ে তেড়ে আসেন।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, এসময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা আত্মরক্ষার্থে ১০ রাউন্ড গুলি ছোড়েন। পরে আহত অবস্থায় যুবককে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।
এর আগে ২৭ মার্চ বিকেলে কুইন্সের নিজেদের বাসায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন উইন রোজারিও নামে এক বাংলাদেশি তরুণ।
তখন নিউইয়র্ক পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছিলেন, উইন রোজারিও কাঁচি দিয়ে পুলিশ অফিসারদের দিয়ে তেড়ে যান। এরপর একপর্যায়ে পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত তরুণের ভাই পুলিশি বিবরণের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, তার মা ছেলেকে আটকাচ্ছিলেন এবং তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, পুলিশ অফিসারদের তাদের বন্দুক থেকে গুলি করার দরকার ছিল না।