কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বকর মজুমদারকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়েছেন —এমন খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই তিন সমন্বয়ক। সেখান থেকে বিকেলে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের তুলে নিয়ে গেছে বলে এএফপি-কে জানিয়েছেন হাসপাতালটির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সুপারভাইজার আনোয়ারা বেগম লাকি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই তিন শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র দিতে চায়নি। কিন্তু পুলিশ একপ্রকার চাপ দিয়েই তাদের তুলে নিয়ে গেছে। নাহিদের বড় বোন ফাতেমা তাসনিম এএফপিকে জানান, সাদা পোশাক পরা গোয়েন্দা সংস্থার ছয় ব্যক্তি তাদের তিনজনকে তুলে নিয়ে যায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন নাহিদ, আসিফ ও আবু বকর।
এএফপির খবরে আরও বলা হয়, চিকিৎসাধীন তিনজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই তাদের সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এর আগেও তাদের তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন।
তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। এএফপি আরও বলছে, শুক্রবার তাদের তুলে নেওয়ার বিষয়টিও কেউ স্বীকার করেননি।
এর আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের ওপর কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়। পাশাপাশি তাদেরকে কেবিনে অবরুদ্ধ এবং হাসপাতালের ওয়াই-ফাই ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে।
দ্য ডেইলি স্টারের ওই প্রতিবেদন বলছে, ওইদিন রাতে হাসপাতালের সপ্তম তলায় নাহিদের কেবিনের সামনে তিনজন ও তৃতীয় তলায় আসিফের কেবিনের সামনে চারজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে সাদা পোশাকে দেখা যায়। তারা নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে এই প্রতিবেদককে কেবিনে প্রবেশ করতে দেননি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশনা আছে বলেও জানান তারা।