স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখলো বাংলাদেশ। এই বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এরই মধ্যে কোথাও কোথাও পানি কমতে শুরু করেছে। আবার কোথাও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আর ত্রাণ কোথাও বেশি যাচ্ছে, আবার কোথাও খাবারের জন্য হাহাকার দেখা গেছে মানুষের মাঝে। তবে সেনা-নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্টসহ স্বেচ্ছাসেবীরা স্ব-উদ্যোগে উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ করছেন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দেখা গেছে শত শত মানুষ পানিতে এখনো আটকা। আবার কেউ উপজেলার প্রায় ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। তবে বেশির ভাগ আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের সংকট।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আশপাশের এলাকায় অবস্থিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বার বার খাবার সরবরাহ হলেও ভেতরের আশ্রয়কেন্দ্র ও অনেক বাড়িতে খাবার যাচ্ছে না। ফলে এসব কেন্দ্রে খাবারের জন্য হাহাকার করছে মানুষ।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছেন ধুম ইউনিয়নের উত্তর মোবারকঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রের প্রায় ৭০০ মানুষ। যেখানে খাবারের খুব প্রয়োজন। কিন্তু ভেতরে অবস্থান হওয়ায় কেউ খাদ্য নিয়ে যেতে পারছে না।
কুমিল্লা
বুড়িচং উপজেলায় বন্যার পানি বেড়েই চলছে। সময় যত গড়াচ্ছে পরিস্থিতি ততই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পানি বন্দিদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কাজ করছেন। দুর্গতদের উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রাক। ট্রাকে করে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে।
ফেনী
পরশুরামে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সেনাবাহিনীসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার কাজ সচল রেখেছেন। উপজেলার অলকা, নোয়াপুর, ধনিকুন্ডা ও সাতকুচিয়া এলাকায় কোথায় হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি। শুভার বাজার এলাকা থেকে পানি সরে গেছে।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি অন্তত ১৪ হাজার ৩৪০টি পরিবার। এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে নদ-নদীর পানি। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে জেলা প্রশাসন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের বেশ কয়েকটিতে উঠেছেন বন্যাকবলিত পরিবারগুলো।
মোংলা
বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সব নদ-নদীর পানি। ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হচ্ছে উপকূল। এরমধ্যে সুন্দরবন দুই ফুট উচ্চার পানিতে তলিয়ে গেছে। বনের ভেতরে নিম্নাঞ্চলে পানির চাপ আরও বেশি।
সিলেট
জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বিভিন্ন পয়েন্টে কমেছে। তবে কুশিয়ারা নদীর পানি তিন পয়েন্টে এখনও বিপৎসীমার উপরে রয়েছে। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।