জলি আহমেদ:নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযথ মর্যাদায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কর্মসূচির অংশ হিসেবে কনস্যুলেটে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়।অনুষ্ঠানে ৫২’র ভাষা শহিদ, ৭১ ও ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের সকল শহীদের স্মরণে ও সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এ সময় কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫-এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মূলত ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ভিত্তি প্রোথিত হয় যা পূর্ণতা পায় মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। তিনি ৫২’র মহান ভাষা শহীদ সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিউরসহ সকল ভাষা শহীদ, ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে সব শহীদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটির পরিচিত মুখ ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ। তাদের মধ্যে অন্যতম আমেরিকা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান গিয়াস আহমেদ, এটর্নি মঈন চৌধুরী ও খন্দকার ডক্টর মাসুদুর রহমান, জেক আব মিল্টন ! এ সময় গিয়াস আহমেদ বলেন, ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের মনে রাখতে হবে। দেশের সংস্কৃতি ও ভাষা বিদেশের মাটিতে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রবাসী হিসেবে আমাদেরও করণীয় রয়েছে। এছাড়া নতুন বাংলাদেশ গঠনে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দ্রুত সংস্কারে শেষে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের তাগিদ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ইকোনোমিস্টস কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার ২০২৪ ও জুলাই অনির্বাণ নামে দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া সাংস্কৃতিক পর্বে নৃত্য পরিবেশন, কবিতা আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশনের আয়োজন করা হয়।দেশাত্মবোধক গানে নৃত্য পরিবেশন করেন শিশু শিল্পী লিয়ানা, সবশেষে সংগীত পরিবেশন করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী লিনি সাবরিন এবং তার সঙ্গে বাজিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশী জনপ্রিয় মিউজিয়ান রিদ,আকাশ এবং সৌরভ! তাদের সুরের মূর্ছনায় এবং অসাধারণ সংগীত পরিবেশনায় পুরো আয়োজনটিকে পরিপূর্ণতা দেয়!
এর আগে কনসাল জেনারেল মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন এবং বাংলাদেশ সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে একুশের প্রথম প্রহরে অস্থায়ী ভিত্তিতে নির্মিত শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।