যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানের পার্ক অ্যাভিনিউয়ের করপোরেট ভবনে এক বন্দুকধারীর গুলিতে হামলাকারীসহ পাঁচজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। তার বয়স ৩৬ বছর। এ ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোক ছড়িয়ে পড়েছে।
দিদারুল ইসলামের দুই সন্তান রয়েছে। বাবার এমমন র্মানিতক মৃত্যুতে কান্না থামছে না সন্তানদের।
এদিকে মুসলিম আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং কমিউনিটির নেতারা দিদারুলকে শ্রদ্ধা জানান।
বাংলাদেশি কমিউনিটি ছাড়াও নিউইয়র্ক পুলিশেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এরিক অ্যাডামস তাকে অফিসার ইসলাম বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অফিসার ইসলাম জীবন রক্ষা করছিলেন। তিনি নিউইয়র্কবাসীদের রক্ষা করছিলেন। ম্যানহাটন হাসপাতালে যেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।
নিহত দিদারুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মারজানুল করিম বলেন, আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। আজ সকালে আমি তাকে দেখেছি এবং ১২ ঘন্টা পরে তিনি মারা গেছেন।
করিম আরও বলেন, নিহত অফিসার একজন অভিবাসী হিসেবে এসেছিলেন। একটি স্কুলে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি তার পরিবারকে সাহায্য করতে এবং আরও ভালো অবস্থানে থাকতে চেয়েছিলেন।
নিহতের শ্যালক ২১ বছর বয়সী সালমান আহমেদ বলেন, দিদারুল সবসময় তার কাজের ব্যাপারে শান্ত থাকতেন, এবং তিনি তার কাজ পছন্দ করতেন। কিন্তু আমরা কখনও ভাবিনি যে এমনটি ঘটতে পারে।
এর আগে নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শেন তামুরা নামের ২৭ বছরের এক যুবক এ হামলা চালান।
এনওয়াইপিডির কমিশনার জেসিকা টিশ গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনা ঘটানোর এক ঘণ্টা আগে শেন তামুরা লাস ভেগাস থেকে নিউইয়র্কে আসেন। তামুরা বহুতল করপোরেট ভবনের ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালান এবং পরে নিজেই গুলি করে আত্মহত্যা করেন। প্রাথমিক তদন্তে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। দিদারুল ইসলাম সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেন।
এনওয়াইপিডির ইন্সপেক্টর খন্দকার আবদুল্লাহ বলেন, দিদারুল ইসলাম প্রায় চার বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছিলেন। তার পরিবারে মা–বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তান আছেন। তার স্ত্রী এখন অন্তঃসত্ত্বা। ব্রঙ্কস বরোর পার্চেস্টার এলাকায় তিনি বসবাস করতেন। আর তার কর্মস্থল ছিল ব্রঙ্কসের ৪৭ প্রিসিন্ক্ট। সোমবার মধ্যরাতে তার মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার তার জানাজা হতে পারে।
দিদারুলের বাড়ি বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় বলে জানান তিনি।
খন্দকার আবদুল্লাহ আরও বলেন, হামলায় দিদারুল ইসলামের নিহত হওয়ার খবর শুনে তার বাবা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সন্দেহভাজন হামলাকারী নিজেই নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজ।