জলি আহমেদ ……..
বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের প্রিয়দর্শিনী খ্যাত অভিনেত্রী মৌসুমী অভিনীত ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ছবির প্রি-স্ক্রিনিং শো হয়ে গেলো নিউইয়র্কের কুইন্সের সেন্ট্রাল পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে। যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিত্র নায়িকা মৌসুমী নিজেই।
এই ছবিটি সম্পূর্ণরূপে চিত্রিত হয়েছে আমেরিকায়। দেশটিতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের দৈনন্দিন এবং পারিবারিক জীবনের ছোট ছোট ঘটনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই ছবিতে।
প্রি-স্ক্রিনিং শোতে ছবির পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী-কলাকুশলী ছাড়াও বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ছবির প্রধান পৃষ্ঠপোষক জ্যামাইকা সোশ্যাল এডাল্ড ডেকেয়ারের পরিচালক তানজির।
তিনি বলেন, ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ছবির গল্পে প্রবাস জীবনের করুন বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যার মাধ্যমে আমরা একটা দারুণ মেসেজ পাই। এমন কাজের সঙ্গে থাকতে পেরে জ্যামাইকা সোশ্যাল এডাল্ড ডেকেয়ার আনন্দিত।
ছবির পরিচালক সাইয়েদ আর ইমন জানান, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বিডি ফিল্ম ইউএসের ব্যানারে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। এখানে বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষদের জন্য কিছু মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
আমেরিকায় বাংলাদেশি সংস্কৃতির প্রচার-প্রসারে বাংলা নাটক এবং সিনেমার জন্য একটা ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু তরুণ। তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তরিকুল ইসলাম মিঠু। কিছুদিন আগে তারা আমেরিকার একজন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীর জীবনের করুণ কাহিনী নিয়ে ‘ভালোবাসার মূল্য কত’ নামে একটা শর্ট ফিল্ম নির্মাণ করেন।
এরপর প্রবাসী মধ্যবিত্ত পরিবারের ট্রাজেডি নিয়ে ‘অর্ধাঙ্গিনী’র গল্পের চিন্তা হয়। এর কেন্দ্রীয় একজন নারী ‘সীমা’ চরিত্রটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র। যার জন্য তিনি উপযুক্ত একজন অভিনেত্রী খুঁজছিলেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেত্রী মৌসুমীকে তিনি গল্পটি শোনান। মৌসুমী গল্পটি পছন্দ করেন এবং কাজ করতে রাজী হন। মাইনাস ১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রচণ্ড বাতাসে বরফের মধ্যেও ঘণ্টার পর ঘণ্টার শুটিং করেছেন মৌসুমী। মৌসুমী ছাড়া এ ছবিতে অভিনয় করা বাকি সবাই আমেরিকায় স্থায়ী বসবাসকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত।
ছবির প্রযোজক এবং মৌসুমির বিপরীতে অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তরিকুল ইসলাম মিঠু। তিনি জানান, এর আগে তিনি বিডি ফিল্ম ইউএসের ব্যানারে একই পরিচালকের ‘ভালোবাসার মূল্য কত’ শর্টমুভি এবং ‘গ্যান্জাম ইউএসএ’ নামে একটা ধারাবাহিক নাটক প্রযোজনা করেছেন এবং মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ‘অর্ধাঙ্গিনী’ তার তৃতীয় প্রডাকশন।
তরিকুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ছবিটা আমেরিকার বাংলাদেশি সংস্কৃতি জগতে একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষদের জীবনচিত্র নিয়ে ছবি বানাতে হলে সেটা আমেরিকাতেই শুটিং করতে হবে। আর এই কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। এখানে শিল্প সংস্কৃতির চর্চায় পৃষ্ঠপোষকতা করার লোকের অভাব।
‘অর্ধাঙ্গিনী’তে মৌসুমির স্বামী চরিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। আমেরিকায় নানা ব্যস্ততার মাঝেও শুটিংয়ের জন্য নিয়মিত সময় দেওয়া এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে গিয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়েছে। সবার প্রচেষ্টায় দারুণ কাজ সম্পন্ন করতে পেরে খুবই আনন্দিত। সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।