যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডোনাল্ড লুকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগ) খন্দকার মাসুদুল আলম।
এই সফরে ডোনাল্ড লু ব্যবসা-বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকারসহ দুই দেশের অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনা করবেন।
তবে এই সফরে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার বৈঠকের কর্মসূচি নেই। কিন্তু তারপরও ডোনাল্ড লুর এই সফরকে ঘিরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক আলোচনা চলছে। পাল্টাপাল্টি বক্তব্যও দিচ্ছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, লু আসছে, তাই বিএনপি নেতারা আবার চাঙ্গা হয়ে গেছেন। আবার ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে গেছে।
পরদিন এর পাল্টা জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশে আগমন নিয়ে আমরা কেউ আগ্রহী নই। আমাদের ভরসা জনগণের ওপর।
অপরদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন বিএনপি নেতারা সে আশায় আছেন যে ডোনাল্ড লু এসে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে যাবেন। কিন্তু বিএনপি নেতারা কোথাও এ বিষয়ে কিছু বলেননি। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা ভয় থেকে প্রলাপ বকছেন। তিনি কি জ্বরে ভুগছেন? মনে হয় তিনি বড় ধরনের অস্থিরতায় আছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই আসবেন। সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন। বিএনপি উদ্ভট চিন্তা করছে। ভাবছে আবার নিষেধাজ্ঞা দেবে।
প্রকাশ্যে প্রধান দুই দলের বক্তব্য এমন হলেও আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কেউই এই সফরকে খাটো করে দেখছে না।
দুটি দলের নেতারাই বলেছেন, নির্বাচন শেষ হয়ে গেলেও নানা দিক বিবেচনায় মার্কিন এই সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম যেমন বিবিসিকে বলেন, ডোনাল্ড লুর আগমন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিএনপি। তবে এর সাথে ষড়যন্ত্রের গন্ধ আছে কি না সেটা এখনই বোঝা যাচ্ছে না।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন আবার বিবিসিকে বলেছেন, নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শগুলো মানেনি সরকার। এ কারণে এখন যুক্তরাষ্ট্র যদি আড়ালে কোনও কিছু করে সেটি সরকারের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
যদিও দুই দলের এই সন্দেহ কিংবা শঙ্কার কোনো কারণ আছে বলে মনে করেন না কূটনীতিক বিশ্লেষকরা।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবীর বলেন, এই সফরে লু বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাবনার জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। রাজনৈতিক যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে তাতে যুক্তরাষ্ট্র নজর নাও দিতে পারে।