১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছিল আওয়ামী লীগ সরকার। তবে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানোর পর আলোচনায় ছিল ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হবে কি না। সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, ১৫ আগস্ট জাতীয়ভাবে শোক দিবস পালন করা হবে না, একই সঙ্গে এ দিন কোনো সরকারি ছুটি থাকবে না।
সোমবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে একটিমাত্র সংগঠন ছাড়া বাকি সব ছাত্র সংগঠন দিবসটি পালন না করার বিষয়ে মত দেয়। এখন লিয়াজোঁ কমিটির এ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানানো হবে। সেখান থেকে আসবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
বৈঠকে ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ বেশ কয়েকটি বামপন্থী সংগঠন এবং ইসলামি ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ছাত্র শিবির, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠনের ৩৬ জনের বেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
লিয়াজোঁ কমিটির পক্ষে ছিলেন কমিটির সদস্য মাহফুজ আবদুল্লাহ, নাসির আব্দুল্লাহ এবং আরিফুল ইসলাম আদিব। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এবং বেশ কয়েকজন সমন্বয়ক উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (জোনায়েদ সাকি) ছাড়া বাকি সব সংগঠন ১৫ আগস্ট ছুটি বাতিল ও জাতীয় শোক দিবস না রাখার পক্ষে মত দেয়।
এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটি বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
আওয়ামী লীগ সেদিন জমায়েত হয়ে কিছু একটা করার চেষ্টা করবে বলে ধারণা থেকে অভ্যুত্থানে শরিক রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, ছাত্র-জনতার বিজয় নস্যাতের চক্রান্ত চলছে। এ পরিস্থিতিতে ড. ইউনূস ১৫ আগস্টের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চান। একমাত্র বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ ১৫ আগস্ট পালনের পক্ষে মত দেন। তিনি বলেছেন, ১৫ আগস্ট সর্বজনীন। যতটুকু শ্রদ্ধা পাওয়া উচিত, ততটুকু শ্রদ্ধাই যেন পায়। উপদেষ্টাদের রাজনৈতিক বক্তব্য থেকে বিরত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টের ছুটি বাতিলের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে উপদেষ্টা পরিষদ। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।